Newspaper

Online Income

অনলাইনে আয়-রোজগার করবার ১০টি উপায়

Cricket Live Score
Yahoo TV

Tech News

গুগল এডসেন্স: একগুচ্ছ টিপস এন্ড ট্রিকসঃ

প্রথমতঃ
গুগল এ্যাডসেন্স আর সাইটের জনপ্রিয়তা-এ ২টি বিষয় নিবিড়ভাবে জড়িত। আপনি যতো ভালই ব্লগিং করেন না কেন ভিজিটর না পেলে আপনার প্রচেষ্টা মাঠে মারা যাবে। আবার মাসে হাজার হাজার ভিজিটর আসে এমন সাইট থেকেও খুব বেশি আয় নাও হতে পারে।এ্যাডসেন্স থেকে আয়ের বিষয়টি নির্ভর করে কোন ধরনের টপিকের উপর লিখছেন, কোন দেশ থেকে আপনি ভিজিটর পাচ্ছেন, কত ক্লিক পরছে, আপনার লেখা কতোটা স্বতন্ত্র, ভাল মানের ইত্যাদি হাজারো বিষয়ের উপর। তাই চট করে একটা ব্লগ বানিয়ে তাতে ২-৪টা পোষ্ট করে এ্যাডসেন্স এপ্রুভ হয়ে কোড বসালেই টাকা আসা শুরু করবে না। আপনার সাইটকে আগে জনপ্রিয় করতে হবে। যত বেশি ভিজিটর আসবে ততোই বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়ার চান্স বাড়বে, বাড়বে ক্লিক প্রতি আপনার আয়ের পরিমান। তাই রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাবেন এই ধারনা নিয়ে ব্লগিং জগতে যারা পা রেখেছেন বা রাখার চিন্তা করছেন তারা আজই নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ফেলুন। ইউনিক কন্টেন্ট, ব্যতিক্রমধর্মী, সহজবোধ্য নান্দনিক উপস্থাপনা আর সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এর মাধ্যমে নিজের সাইটের জনপ্রিয়তাকে কিভাবে তুঙ্গস্পর্শী করা যায় তা নিয়ে ভাবুন। প্রথম দিকে ব্যর্থতা আসতে পারে তাতে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। কেন ব্যর্থ হলেন, কিভাবে আপনার পছন্দের বিষয় নিয়ে লিখবেন, কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করবেন, কিভাবে পাঠককে আকর্ষন করবেন, কিভাবে পাঠকের আকর্ষন ধরে রাখবেন-এসব কিছু ধীরে ধীরে বুঝার চেষ্টা করতে থাকুন আর লেগে থাকুন-দেখবেন এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় শুরু হচ্ছে-হয়তোবা আপনার প্রত্যাশার থেকেও অনেক অনেক বেশী পরিমানে।

দ্বিতীয়তঃ
একটা ওয়েব সাইট ভিজিট করলে যে অংশটুকু মনিটরের পর্দায় শুরুতেই একবারে স্ক্রলিং না করেই দেখা যায় তাকে “Above the Fold” বলে। নিঃসন্দেহে এসব জায়গায় বিজ্ঞাপন দেখালে সবচেয়ে বেশি ক্লিক পরার চান্স থাকে, আয়ও হয় বেশই।গুগলের এ্যাডসেন্স হিট ম্যাপও তাই বলে। তবে এখানে একটা “কিন্তু” আছে।সাধারনত প্রতিটি ব্লগের ডিজাইন হয় ইউনিক।অন্য ব্লগের যে স্থান থেকে সবচেয়ে বেশী আয় হয় সে একই স্থানে কোড বসালেও হয়তো আপনার তেমন আয় নাও হতে পারে।আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি আমার ব্লগের ডান/বাম সাইডবারে কোড বসালে কোন ক্লিক পরে না বললেই চলে। সবচেয়ে বেশি আয় হয় হেডারের নিচে বসানো ব্যানার এ্যাড থেকে।জায়গাটা “Above the Fold” বলে ক্লিক প্রতি আয় হয় অনেক বেশি, কোন সময় ২.২৫ ডলার পর্যন্ত।তাই নিজের ব্লগকে নিয়ে এক্সপেরেমেন্ট করুন, সেটিকে পাঠকের চোখে দেখুন।কোন কোন জায়গায় কিভাবে কোন কোন এ্যাড ইউনিট বসালে ব্লগের সাথে মানানসই হবে, বেশী ক্লিক পাবেন তা খুজে বের করুন। অন্যের পরামর্শে নয় বরং নিজের প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার আলোকে এক্সপেরিমেন্ট করতে থাকুন,ইনশাল্লাহ খুব দ্রুত সাফল্যের পথটি খুজে পাবেন।

তৃতীয়তঃ
অনেকেই দামী কিওয়ার্ড ধরে ব্লগ বা ওয়েব সাইট বানানোর চেষ্টা করেন। একসময় তীব্র প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে ধৈর্য্য হারিয়ে লেখালেখি বন্ধ করে দেন।অথচ একটু সৃজনশীল চিন্তা করলে সেই দামী কিওয়ার্ডগুলোকে আপনার ব্লগে ধীরে ধীরে প্রবেশ করাতে পারেন। ধরুন আপনি Accounting এর বেসিক টিউটোরিয়াল নিয়ে একটি ব্লগ বানালেন। এখন আপনি যখন বেসিক টিউটোরিয়াল লিখবেন তখন হয়তো অনেক ভিজিটর পাবেন কিন্তু খুব বেশি আয় হবে না।তাতে সমস্যা নেই। একটু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করুন।প্রথম ৪০-৬০ টা ইউনিক টিউটোরিয়াল লেখার মাধ্যেমে দেখবেন ধীরে ধীরে একটি ভাল পাঠকগোষ্ঠী তৈরী করতে পেরেছেন যারা নিয়মিত আপনার ব্লগ ভিজিট করছেন।এবার আপনি ধীরে ধীরে নিজের লেখায় বৈচিত্র আনুন। গুগল এর অনন্য সার্ভিস Adword Keyword টুলটির কথা জানেন নিশ্চয়ই। ইদানীং এটি আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। এই টুলটির সাহায্যে আপনার টপিক রিলেটেড কিওয়ার্ডগুলোর Estimated Avg. CPC চেক করুন। Views থেকে Customize Columns থেকে Estimated Avg. CPC অপশনটি এনাবেল করে দিন। এবার Estimated Avg. CPC লেখা কলামে ক্লিক করলেই Highest Paying Keyword গুলো সবার আগে প্রদর্শন করবে।উদাহরন হিসেবে বলা যায়, Accounting এর উপর করা কোন ব্লগে Online Accounting Degrees, Online Accounting Schools, Online Accounting Classes এসব টপিকের উপর ধারাবাহিক রিভিউ লিখতে পারেন। ব্লগের টপিকের সাথে মিল থাকায় পাঠকও খুশী হবে, আবার আপনার আয়ের সম্ভাবনাও বাড়বে কেননা উল্লেখিত কিওয়ার্ডগুলোর Estimated Avg. CPC যথাক্রমে $24.72, $20.62, $24.59। কিওয়ার্ড বসালেই যে এই মানের এ্যাড পাবেন তা নয় কিন্তু দামী টপিক হওয়াতে আপনার অন্যান্য লেখার থেকে এই সব লেখা থেকে বেশী আয়ের সম্ভাবনা থাকবে।

চতুর্থতঃ
এ্যাডসেন্স থেকে আয়ের পরিমান নির্ধারন করা হয় কিওয়ার্ড সিলেকশন, ভিজিটরের পরিমান, তাদের ভৌগলিক অবস্থান,এ্যাডের প্রকৃতি ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয়ের উপর। সাধারনত আমরা বিভিন্ন জায়গায় যে সব দামী কিওয়ার্ডের তালিকা পাই তার সবই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য। যেমন ধরুন উপরে উল্লেখিত কিওয়ার্ডগুলোর Estimated Avg. CPC বাংলাদেশের হিসেবে ১ ডলারেরও কম। তাই কোন দেশ থেকে ভিজিটর আসছে সেদিকে চোখ রাখুন, সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে যেন ৫০% এর বেশি ভিজিটর আসে সেদিকে সচেষ্ট হউন। গুগল এনালিটিক্স সহ বিভিন্ন ট্র্যাকিং টুল ব্যবহার করে ভিজিটর আসার পরিমান, Landing page, Keyword analysis, Most visible pages প্রভৃতি জানার চেষ্টা করুন।সর্বোপরি High Buying Capability আছে এমন দেশের ভিজিটর আকৃষ্ট করার চেষ্টা করুন।

পঞ্চমতঃ
এ্যাডসেন্স থেকে সাফল্য পেতে চাইলে কোন শর্টকাট পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। বিখ্যাত লেখক SHIV KHERA এর একটি রেজিষ্ট্রার্ড উক্তি আছে তা হোলঃ
“WINNERS DON’T DO DIFFERENT THINGS.
THEY DO THINGS DIFFERENTLY”

এটি আমার সবচেয়ে প্রিয় উক্তি।আমার বিশ্বাস প্রতিটি নতুন ব্লগারেরও তাই মেনে চলা উচিত। নিত্য নতুন ফর্মুলার পিছনে না দৌরিয়ে এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয়ের স্বাভাবিক উপায়গুলো নিজের মতো কাষ্টমাইজেশন করে এপ্লাই করুন।আশা করি সাফল্য পাবেন। এ প্রসংগে একটি ঘটনা না শেয়ার করলেই নয়। কিছুদিন আগে রিয়া আপুর ইংরেজী ব্লগে একটা লেখা দেখলাম যেখানে তিনি সেই পেজে ৫টি এ্যাড ইউনিট ব্যাবহার করেছিলেন। লেখার মধ্যে ৩টি আর ১টি করে ব্যানার আর সাইডবারে।প্রিমিয়াম পাবলিশার ছাড়া ৫টি এ্যাড ইউনিট দেখানো সম্ভব নয়।পরে আপুর মাধ্যমে জানলাম ব্যাপারটি Iframe এর মাধ্যমে করা। আমার কাছে আইডিয়াটি দারুন মনে হওয়ায় নিজের ব্লগে তা এপ্লাই করব ভাবলাম। তবে তার আগে একটু সিউর হওয়ার জন্য অন্য ফোরামে প্রশ্ন করলাম। অভিজ্ঞ পাবলিশাররা এটি করতে মানা করলেন। পরে দেখলাম আপুও সেই বিজ্ঞাপনগুলো সরিয়ে দিয়েছেন। তাই আমার কথা হল, রিয়া আপু বা হাসান ভাই অনেক অভিজ্ঞ ব্লগার, এ্যাডসেন্স পাবলিশার। তাদের কাছে যেটা নিছক ছেলেখেলা আমাদের অনেকের জন্য তা আগুন নিয়ে খেলার শামিল হতে পারে। বিভিন্ন সাইটে ঘুরে ঘুরে কোন নতুন ফর্মুলা পেলেই উত্তেজিত হয়ে যাবেন না। আগে অভিজ্ঞ ব্লগারদের সাথে পরামর্শ করুন। আদৌ সেই ফর্মুলার প্রয়োজন আছে কিনা তা যাচাই করুন। আর সবচেয়ে ভাল হয় সহজ স্বাভাবিক পদ্ধতিগুলোই প্রয়োগ করুন, কেননা বিজয়ীরা যুগ যুগ ধরে সেভাবেই সাফল্য পেয়ে চলছেন।

ষষ্ঠঃ
এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস শেয়ার করি। আমরা অনেকেই বিজ্ঞাপনের কোড বসানোর সময় Image Ad নাকি Text Ad বসাব তা নিয়ে চিন্তা করি না। ভাবি একটা বসালেই তো হলো। একবার ভেবে দেখুন তো আপনি খুব সুন্দর করে লেখার সাথে মিল রেখে এ্যাড ইউনিটটা ব্লেন্ডিং করলেন, টেক্সের খুব কাছে আকর্ষনীয়ভাবে কোড বসালেন অথচ পরে দেখতে পেলেন সেখানে ভয়াল দর্শন একটা ফ্ল্যাশ এ্যাড জ্বল জ্বল করছে। আবার ধরুন একটি লেখায়, কিছু এমবেডেড ভিডিও শেয়ার করলেন যার প্রতিটির সাইজ এ্যাড ইউনিটের সাথে মিল রেখে ৩৩৬*২৮০ করলেন এই আশায় যাতে ভিডিওগুলোর মাঝে সেই একই সাইজের বিজ্ঞাপন দেখালে পাঠক ক্লিক করে। পরে দেখলেন আপনার সব প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গুগল সেখানে Text Ad দেখাচ্ছে, যা খুব সহজেই আপনার পাঠক স্কিপ করে যাচ্ছে। তাই আমার পরামর্শ হোল গুগল যখন আপনাকে আপনার পছন্দ মতো বিজ্ঞাপন দেখানোর সুযোগ দিচ্ছে তখন কেন সেই সুযোগ এর পূর্ণ সদ্বব্যবহার করবেন না? যে জায়গায় যেই ধরনের এ্যাড মানায়, পাঠককে বিরক্ত করে না বরং জানার আগ্রহ যোগায়, বুদ্ধি করে সেই জায়গায় সেই ধরনের বিজ্ঞাপন দেখান। একান্তই কোন কোন ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে Text and Image Ad এই অপশন নির্বাচন করুন।

সপ্তমঃ
এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে প্রতিটি একাউন্টে সর্বোচ্চ ২০০ টি চ্যানেল ব্যাবহারের সুযোগ থাকে। এই চ্যানেলের মাধ্যমে কোন ধরনের এ্যাড ইউনিট থেকে কতো আয় হচ্ছে এই বিষয়টি যেমন ট্র্যাক করতে পারবেন তেমনিভাবে বুদ্ধি করে চ্যানেলের Description এ নিজের ব্লগের Advertisement করতে পারবেন যাতে বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার ব্লগে/সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে উতসাহ বোধ করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি চ্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা নোটপ্যাড সেই সেই নামে সেইভ করে তাতে সেই চ্যানেলের অন্তর্গত এ্যাড ইউনিটগুলোর কোড সেভ করে রাখি। পরে চ্যানেলের Description এ জানাই কোন ধরনের লেখায় এই চ্যানেলের এ্যাডগুলো দেখাব, আমার ব্লগের ভিজিটর কতো, সামনের পরিকল্পনা কি। একটু বুদ্ধি করলে ২৫৫ Character এর মধ্যে অনেক তথ্য দেওয়া যায়।যেমন ধরুন আপনি আপনার ব্লগের মান্থলি এনালিটিক্স রিপোর্ট কোথাও আপলোড করে bit.ly বা tiny.cc এর মতো সার্ভিস ব্যাবহার করে সেই রিপোর্টের লিঙ্ক ছোট করে দিতে পারেন। এভাবে বুদ্ধি করে এ্যাডসেন্স চ্যানেল ব্যবহার করুন, নিজের আয় ট্র্যাক করুন, সাথে সাথে বিজ্ঞাপনদাতাদের উতসাহ যোগান।

অষ্টমঃ
আপনার জানেন নিশ্চই গুগল এ্যাডসেন্সের এ্যাড প্রদর্শন করে পাঠকের ভৌগলিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। তাই বাংলাদেশ থেকে আমি যেই বিজ্ঞাপন দেখি হাসান ভাইএর UK এর আইপি থেকে তা না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। ভিন্ন ভিন্ন দেশে কি কি এ্যাড প্রদর্শিত হচ্ছে তা জানতে গুগল এডসেন্স প্রিভিউ টুল একটি কার্যকরি উপায়। এর বিস্তারিত ব্যাবহার জানতে এই লেখাটি পড়ুন। তবে আমার দৃষ্টিতে এই টুলটির একটি অসুবিধা হল এটি ইমেজ/ভিডিও এ্যাড শো করে না, অন্তত আমার চোখে পড়ে নি। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে Tor ব্যাবহার করি। এখান থেকে Tor নামিয়ে নিন, ইন্সটল করে ফায়ারফক্সে এ্যাড অন এনাবেল করে দিন। ফায়ারফক্সে বার বার Tor Enable/Disable করার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের আইপি দিয়ে ঢুকে ঢুকে দেখুন আপনার ব্লগে কি ধরনের এ্যাড শো করছে।

নবমঃ
এ্যাডসেন্স বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনায় Adsense For Feed এর বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত হতে দেখেছি। অথচ ফিডবার্নারের ইমেইল সাবস্ক্রাবার/ফিড রিডারের মাধ্যমেও বেশ বড় অংকের অর্থ যোগ হতে পারে আপনার একাউন্টে। অনেকেই জানেন আমার একটি মাত্র ব্লগ আছে যেখানে প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছি ইমেইল সাবস্ক্রাবার এর পরিমান বাড়াতে। Wp Greet Box প্লাগইন আর কমেন্টসের মাধ্যমে পাঠককে ইমেইল সাবস্ক্রাবার হতে উতসাহ দিয়েছি। যার ফলে প্রচুর সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার পেয়েছি।

Image and video hosting by TinyPic

এ্যাডসেন্স ফর ফিড এনাবেল করার পর আজ ১৮ জুন ২০১০ পর্যন্ত এটি থেকে আয় হয়েছে 77.36 $। অনেকের জন্যই এটি নিতান্তই মামুলি একটি ব্যাপার হলেও আমার মতো সাধারন একজন ব্লগারের জন্য নিঃসন্দেহে এটি খুব বড় অঙ্কের একটি আয়। তাই যারা এই বিষয়টি এতো দিন গুরুত্ব দিন নি তারা আজ থেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবুন, পাঠককে সাবস্ক্রাইব করতে উতসাহ দিন আর ভাল করে লেখার টাইটেলের কালারের সাথে ফিড এর এ্যাড এর রঙ ম্যাচ করুন। আশা করি সাফল্য পাবেন।

দশমঃ
এ্যাডসেন্সের বিভিন্ন কালার কম্বিনেশন নিয়ে প্রায় সবাই ঘাটা ঘাটি করেন। জানেন নিশ্চয়ই যে ইচ্ছে করলে নিজের পছন্দের কালার কম্বিনেশন সেভ করে রাখা যায় যাতে পরবর্তিতে তা ব্যাবহার করতে পারেন। একে কালার প্যালেট বলে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন এখান থেকে। যাই হোক, কালার নিয়ে এক্সপেরিমেন্টের জন্য বা ব্লগের বিভিন্ন অংশের কালার কোড জানতে অনেকেই অনেক কিছু ব্যাবহার করেন। আমি Colorcop নামের একটি ছোট্ট কিন্তু দারুন কার্যকর একটি টুল ব্যাবহার করি অন্যদেরও তাই Suggest করি। কয়েক কিলোবাইটের ছোট্ট এই টুলটি ডাউনলোড করতে পারেন এখান থেকে। টুলটিতে যে কলমটি দেখবেন সেটিকে ড্র্যাগ করে ওয়েব সাইটের যে কোন অংশের উপর ধরুন, সাথে সাথে সেই অংশের কালার কোড শো করবে। ক্ষেত্রবিশেষে অনেক সময় অনেক সুক্ষ্ণ অংশের কোড জানতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফায়ারফক্সে গিয়ে সেই পেইজটি লোড করে Ctrl (কন্ট্রোল) বাটন চেপে ধরে + বাটন প্রেস করতে থাকুন দেখবেন জুম হবে। এরপর সেই কলমটি সেই অংশে নিয়ে গিয়ে কালার কোডটি জেনে নিন। আরেকটি বিষয় না বললেই নয় তা হোল আপনার ব্লগ/সাইটে লিঙ্ক এর জন্য কোন কালার ব্যবহার করবেন? অনেকেই লিঙ্ক এর জন্য সবুজ/লাল রঙ ব্যাবহার করেন। আমার ব্যাক্তিগত অভিমত এ্যাডসেন্সে এর এ্যাড এর টাইটেল, ফিডবার্নার এর টাইটেল, ব্লগের লিঙ্ক এসব কিছুর জন্য গুগলের মতো নীল রঙ এর কালার ব্যাবহার করুন। কেননা প্রথাগতভাবে প্রায় সব সাইটেই আমরা সেভাবেই দেখে অভ্যস্থ।

একাদশঃ
গুগল এ্যাডসেন্সের প্রতিটি এ্যাড ফরমেট ভিন্ন ও স্বতন্ত্র। প্রতিটি সাইজ যেমন আলাদা তেমনি প্রতিটিতে প্রদর্শিত টেক্সের সাইজেও ভিন্নতা রয়েছে। আবার ৩৩৬*২৮০, ৩০০*২৫০, ২৫০*২৫০ বা ২০০*২০০ এর মতো কিছু এ্যাড ফরম্যাটে ইমেজ এবং ভিডিও এ্যাড বেশী দেখানো হয়, ক্লিক ও পরে বেশি। তাই আপনার ব্লগের লেআউট, ব্লগের কোথায় কোড বসাবেন, কি ধরনের বিজ্ঞাপন দেখাতে চান- ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রেখে সঠিক এ্যাড ফরম্যাট বসানোর চেষ্টা করুন। আরেকটি বিষয় না বললেই নয় তা হোল যে আমরা অনেকেই ইমেজ এ্যাডে দেখানোর প্রতি বেশি আগ্রহী হই। অথচ প্রোব্লগার সাইটের এই অতিথি পোষ্টে দেখা যায় ক্লিক পেতে Text Ad, Image Ad এর চেয়ে বেশি কার্যকর। যদিও এটি একটি ব্লগের উপর করা সার্ভে থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা যা আপনার ব্লগের জন্য সত্য নাও হতে পারে, তবে কখনোই Text Ad এর প্রতি অনীহা প্রকাশ করা উচিত নয়।

দ্বাদশঃ
আপনি যদি একটি ব্লগ থেকে নিয়মিত সাফল্য পেতে থাকেন তবে হাতে কিছু টাকা আসা মাত্রই নুন্যতম ২ বছরের জন্য সেই ব্লগ/সাইটের ডোমেইনটি নিজের নামে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেলুন। এতে করে সজীবের মতো অনাকাংখিত ঝামেলার হাত থেকে যেমন বাচঁবেন তেমনি আপনার সাইটের নিয়মিত Advertiser গন দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক স্থাপনে উতসাহিত হবে। ডোমেইনের আয়ু বেশী দিন না থাকলে অনেক বিজ্ঞাপনদাতারা বিজ্ঞাপন নাও দেখাতে চাইতে পারে। তাই সব দিক বিবেচনায় কয়েক বছরের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করাই শ্রেয়।

ত্রয়োদশঃ
এবার একটু ভিন্ন দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। আগের লেখায় বলেছিলাম গুগল এ্যাডসেন্স অনলাইনে আয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও অনন্য মাধ্যম কিন্তু একমাত্র উপায় নয়। “বড় বড় ব্লগারদের আয়ের রিপোর্ট পড়লে দেখা যায় তাদের অনেকেরই আয়ের সবচেয়ে ছোট অংশটুকু আসে গুগল এ্যাডসেন্স থেকে“। তাদের অনেকেই আয় করেন প্রাইভেট এ্যাডের মাধ্যমে। একটু বুদ্ধি করলে এ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন সেই কাংখিত Advertiser যে আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দিত আগ্রহী হতে পারে, আপনি পেতে পারেন মাসে মাসে নিশ্চিত আয়ের সুযোগ। কি ঘোলাটে লাগছে? ঠিক আছে বুঝিয়ে দিচ্ছি। ধরুন আপনার ব্লগে ৩০-৪০ টি আলাদা আলাদা কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখায়। আপনি বিজ্ঞাপনের সাথে পাওয়া লিঙ্ক থেকে তাদের নিকট সরাসরি ইমেইল করে প্রাইভেট এ্যাড দিতে আমন্ত্রন জানাতে পারেন। আবার Google.com এ ঢুঁকে আপনার টপিকের সাথে মিলে এমন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ দিলে দেখবেন সার্চ রেজাল্টের উপরে বা ডান পাশে কিছু প্রাসংগিক বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। এদেরকেও টার্গেট করতে পারেন। আবার Google.com এ সার্চ দিলে যেসব বিজ্ঞাপন পাবেন Google.com.au তে সার্চ করলে সেই একই বিজ্ঞাপন নাও পেতে পারেন। এভাবে Country specific Google Search এর মাধ্যমেও অনেক এ্যাডভারটাইজারের নাম জানতে পারবেন যারা এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে নিজেদের প্রোমোট করছেন। এরাই হতে পারে আপনার ব্লগের ভবিষ্যত প্রাইভেট এ্যাডভারটাইজার।

চর্তুদশঃ
আবার মূল আলোচনায় ফিরে আসি। এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে সাফল্য পেতে চাইলে নিজের টপিক, পাঠকের চাওয়া পাওয়া, কিওয়ার্ড প্রভ্রতি নিয়ে নিরন্তর রিসার্চ করুন, সেই সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যান। বিভিন্ন এ্যাড ইউনিট বিভিন্ন জায়গায়, নানা রঙ এ, নানা ফন্টে, নানাভাবে বসিয়ে গবেষনা করুন। হয়তো আপনি যা ভাবেন নি সেই জায়গায়, সেই ধরনের এ্যাড থেকেই আপনার বেশি আয় হচ্ছে। এভাবেই একদিন এক্সপেরিমেন্ট করতে করতে মনে হোল আমার ব্লগের হেডারের নিচে একটা ব্যানার এড বসালে কেমন হয়। ১৭ মার্চ ২০১০ থেকে ১৮ জুন ২০১০ পর্যন্ত এই একটি মাত্র জায়গা থেকে, একটি মাত্র সাইট থেকে আমার আয় হয়েছে 111.27 $। সেদিনের এই একটা এক্সপেরিমেন্ট আমার সাফল্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।

Image and video hosting by TinyPic

এ্যাডসেন্সে বিভিন্ন রঙ পছন্দ করার সুযোগ রয়েছে। মাঝে মাঝে পুরোপুরী ব্লেন্ডিং না করে রংচঙ্গা কালার ব্যাবহার করে দেখুন। সেখান থেকেও সাফল্য পেতে পারেন। হাসান ভাই এক আলোচনায় একবার বলেছিলেন “অনেক সময় অনেক সুন্দর ডিজাইনের সাইটে বেশি ক্লিক পরে না যা একটি রংচংগা Fancy Looking সাইটে পরে।” তাই একটাই কথা বার বার বলব Keep Experimenting…Keep Experimenting….Keep Experimenting



পঞ্চদশঃ


গুগল এ্যাডসেন্স থেকে সত্যি আয় করতে চান?

তাহলে নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করুন আপনি এর জন্য কতটা শ্রম ও সময় দিচ্ছেন। আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলদ্ধি পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ সৎ পথে থেকে মোটামুটি পরিমান আয় করা। আপনি যদি সত্যি অনলাইনে আয় করতে চান তবে নড়েচড়ে বসুন। ৯টা ৫ টা অফিসের কাজের মতো এটিকেও মূল্যায়ন করতে শিখুন, এর পিছনে শ্রম দিন, পড়াশুনা করুন, ইনভেষ্ট করুন। অনলাইন কেন পৃথিবীর কোথাও টাকা উড়ে না, একে অর্জন করতে হয়, এর পেছনে দিনের পর দিন লেগে থাকতে হয়, তবেই সাফল্য আসে-কারও জন্য সেটা হয় খুব দ্রুত কারও জন্য বড্ড ধীরে। আমরা দৈণন্দিন জীবনে কত টাকাই না উটকো কাজে নষ্ট করি, কত সময় অনর্থক হাসি তামাশায় পার করে দেই। আপনার জীবনের সেই মূল্যাবান অর্থ আর সময় কিভাবে অনলাইন থেকে আয় করা যায় তা জানতে ও করতে ব্যাবহার করুন। একটু নাহয় নিজের ঢোল পেটাই। আমি নিজের আগ্রহে Joel Comm এর “Adsense Secrets 4“ বই , Adsense এর Help বিভাগের প্রায় ৮৫% আর্টিকেল, বিভিন্ন সাইট থেকে Adsense, WordPress, SEO, Online Money Making, Facebook Marketing প্রভৃতি বিষয়ের উপর ভাল ভাল লেখাগুলো সংগ্রহ করে সেগুলোকে গত কয়েক বছরে বই আকারে প্রিন্ট করেছি। সেই সাথে যেই বিষয়ের উপর ইবুক লেখার কাজ করছি সেই টপিকের উপর লেখা ৫টি ইবুকও প্রন্ট করেছি। এসবের জন্য প্রায় ২৫০০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। আমার কাছে এগুলো তাই কখনো “অযথা ব্যয়” মনে হয় নি মনে হয়েছে “Investment”। অনলাইন আমার প্রিয় জগত, ভালবাসার জগত। আমি চাই এর মাঝেই নিজের একটা ভবিষ্যত তৈরী করতে তাই নিজের সীমিত সাধ্যের মাঝে যতটুকু করা যায় তাই করার চেষ্টা করছি। বলার মতো কোন কিছু এখনো করে ফেলে নি কিন্তু ধীরে ধীরে হলেও সাফল্য পাচ্ছি। আগে যখন ফ্রী থাকতাম বা বাসে করে কোথাও যাওয়া আসা করার সময় মাঝে মাঝে এসব প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়াল হাতে থাকত,সুযোগ পেলে পড়তাম। আবার কখনো মোবাইলে বিভিন্ন অডিও, ভিডিও টিউটোরিয়াল শুনতাম। আমার আগের সেই পড়াশুনাগুলো এখন কাজে দিচ্ছে। যাই হোক, আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা একটা হুযুগে জাতি। এ্যাডসেন্স থেকে আয় করা যায় শুনলেই উত্তেজিত হয়ে যাই কিন্তু এর জন্য কষ্ট স্বীকার করতে রাজি হই না-ভাবটা এমন যেন ডলার বাবাজি প্রতিদিন আমাদের ঘরে হেটে হেটে চলে আসবে। তো যারা ফ্রী ব্লগস্পট বা অন্য কোন উপায়ে যেনতেনভাবে ব্লগ খুলে ২-১ মাস কিছু “কাজ (?)” করেই হাপিয়ে উঠেন, বলেন এ্যাডসেন্স থেকে আয় একটি ফালতু বিষয় তাদের কাছে সবিনয় অনুরোধ আজই আপনার দৃষ্টিভংগী পাল্টে ফেলুন। আর সবকিছুর মতো অনলাইনের জগতটাও “Survival of the Fittest’ দের জন্য। অন্য ব্লগার বা ওয়েব পাবলিশারদের সাথে প্রতিযোগীতা করে টিকে থাকতে পারলেই কেবল আপনি নিয়মিত সাফল্য পাবেন, আর যদি সাধ্যের মধ্যে সম্ভব সব কিছু করার পরেও দীর্ঘদিনেও যদি তা না পান তবে বুঝবেন অনলাইনে আয় আপনার দ্বারা সম্ভব নয়। জগতে সবাই যে সব কিছু পারবে এমন কোন কথা নেই, হয়তোবা অন্য কোন ক্ষেত্রে আপনার সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। সেই পথেই না হয় চেষ্টা করুন। খুব রূঢ় শোনালেও এটাই বাস্তবতা-অন্তত আমার চোখে দেখা।

0 Comments:

Post a Comment



Free Website templateswww.seodesign.usFree Flash TemplatesRiad In FezFree joomla templatesAgence Web MarocMusic Videos OnlineFree Wordpress Themeswww.freethemes4all.comFree Blog TemplatesLast NewsFree CMS TemplatesFree CSS TemplatesSoccer Videos OnlineFree Wordpress ThemesFree CSS Templates Dreamweaver